উপন্যাসটির ১২-তম পর্বের খানিকটা এখানে দেয়া হলো:
— হ্যালো...
— ইয়েস ম্যাম। বলো।
— এখন কোথায় তুমি?
— জ্যামে এবং ঘামে।
করছি ওয়েট
গাড়ি কখন থামে?
ব্যস্ত ভীষণ
এক আজাইরা কামে...
— এই কবি, ছন্দ রাখো তো।
— শোনো বালিকা,
মাইয়ারা থাকে দ্বন্দ্বে
কবিরা থাকে ছন্দে
এই ঢাকা
থাকে ভরা
আবর্জনার দুর্গন্ধে...
— তুমি কি ছন্দ রাখবা?
— বলোনি বালিকা মন্দ
কিন্তু রাখব কোথায়—
আমার হাজারো ছন্দ?
— সিরিয়াসলি বলো, তুমি কোথায়? জ্যামে আটকে আছ কেন?
— আমাকে ডেকেছে এলাকার নেতা
গত রাতে তাকে দিয়েছিনু কথা
তার নামে লিখেছি একটি পদ্য
বিনিময়ে পাবো কিছু টাকা
আর আজ দুপুরের ভারী খাদ্য...
— তোমাকে না বলেছি— নেতাদের সাথে চলবে না।
— কিন্তু কী করব বলো, এই বঙ্গীয় জনপদে প্রতি পদে পদে নেতাদের পদলেহন করেই যে চলতে হয়।
— কোন নেতা তোমাকে ডেকেছে? এবং কেন?
— আমাদের প্রিয় নেতা, জননেতা জনাব কুদ্দুস শেখ।
— কুদ্দুস শেখ? কে উনি?
— উনি এইবার পৌরসভার মেয়র পদে দাঁড়াচ্ছেন। তার নির্বাচনী সভা। গতকাল রাতে তার সাগরেদ জলিল আমাকে ফোন দিয়েছিল।
— কী বলল জলিল?
— জলিল বলল, আপনি কি কবি?
— তুমি কী বললে?
— আমি বললাম,
ইয়েস, আমি কবি, এতে নাই ভুল
আমি একালের বিদ্রোহী নজরুল।
— তারপর?
— তারপর লোকটি হাসল হো হো করে।
— কেন?
— পড়ে বলছি। এখন নামতে হবে।
— কবি, শোনো।
— বলো পুষ্পিতা।
— একটা কবিতা শোনাও না?
— এতক্ষণ কী শোনালাম?
— এইগুলা কবিতা না।
— মানে?
— মানে ছাই। একটু ভিন্নরকম কবিতা শোনাও।
— ভিন্নরকম মানে?
— মানে কচু। শোনাতে হবে না।
— প্লিজ, বলো। কেমন কবিতা শুনতে চাও?
— বলব না। বুঝে নিতে হবে। পুষ্পিতা কেমন কবিতা শুনতে চায় এতদিনেও তুমি বুঝলে না, বোকা কবি।
কবি কিছুক্ষণ ভাবল। গলাটা একটু কেশে পরিষ্কার করে নিলো। অতঃপর কবি শোনালো তাঁর অমর কবিতাখানি—
পুষ্পিতা,
আমার কথা
জানি না—
তোমার বিশ্বাস হবে কি না?
একটি দিন কাটে না
ইদানীং তুমিহীনা।
নিঃস্তব, নিঃসীম রাতে
মনে হয়, আছো—
তুমি মোর সাথে।
কল্পনায় রাখি হাত
তোমার ওই নরম হাতে।
কবিতার ছন্দে কোথায় যেন হারিয়ে গেল পুষ্পিতা। চোখের সামনে একটি নদী— তাতে ছোটো ছোটো ঢেউ। নদীতে নৌকা। নৌকার বৈঠা চালাচ্ছে কবি। আর গলুইয়ে বসে নদীর শান্ত জল স্পর্শ করছে পুষ্পিতা। কী বিচিত্র অনুভূতি!
ওপাশ থেকে শব্দ এল, "পুষ্পিতা, তুমি কি দিনের বেলায়ই ঘুমিয়ে গেলে?"
পুষ্পিতা বলল, "তোমার কবিতার শেষ পাঁচটি লাইন আরও পাঁচবার শোনাও..."
কবি বলল, "কেন?"
পুষ্পিতা লম্বা একটি শ্বাস ছেড়ে বলল, "জানি না। জানি না..."
(চলবে....)
লেখা: ওয়াদুদ খান
বইটির প্রচ্ছদ করেছেন: মাহী মজুমদার
বইটি প্রকাশ করছে: বাংলানামা
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
উপন্যাস: ফ্যান্টাসি- ৩ (কবি)
আসছে বইমেলা- ২০২০
কুরিয়ারে পেতে ডায়াল করুন: ০১৭৮৫-৫৬২০৮০
— হ্যালো...
— ইয়েস ম্যাম। বলো।
— এখন কোথায় তুমি?
— জ্যামে এবং ঘামে।
করছি ওয়েট
গাড়ি কখন থামে?
ব্যস্ত ভীষণ
এক আজাইরা কামে...
— এই কবি, ছন্দ রাখো তো।
— শোনো বালিকা,
মাইয়ারা থাকে দ্বন্দ্বে
কবিরা থাকে ছন্দে
এই ঢাকা
থাকে ভরা
আবর্জনার দুর্গন্ধে...
— তুমি কি ছন্দ রাখবা?
— বলোনি বালিকা মন্দ
কিন্তু রাখব কোথায়—
আমার হাজারো ছন্দ?
— সিরিয়াসলি বলো, তুমি কোথায়? জ্যামে আটকে আছ কেন?
— আমাকে ডেকেছে এলাকার নেতা
গত রাতে তাকে দিয়েছিনু কথা
তার নামে লিখেছি একটি পদ্য
বিনিময়ে পাবো কিছু টাকা
আর আজ দুপুরের ভারী খাদ্য...
— তোমাকে না বলেছি— নেতাদের সাথে চলবে না।
— কিন্তু কী করব বলো, এই বঙ্গীয় জনপদে প্রতি পদে পদে নেতাদের পদলেহন করেই যে চলতে হয়।
— কোন নেতা তোমাকে ডেকেছে? এবং কেন?
— আমাদের প্রিয় নেতা, জননেতা জনাব কুদ্দুস শেখ।
— কুদ্দুস শেখ? কে উনি?
— উনি এইবার পৌরসভার মেয়র পদে দাঁড়াচ্ছেন। তার নির্বাচনী সভা। গতকাল রাতে তার সাগরেদ জলিল আমাকে ফোন দিয়েছিল।
— কী বলল জলিল?
— জলিল বলল, আপনি কি কবি?
— তুমি কী বললে?
— আমি বললাম,
ইয়েস, আমি কবি, এতে নাই ভুল
আমি একালের বিদ্রোহী নজরুল।
— তারপর?
— তারপর লোকটি হাসল হো হো করে।
— কেন?
— পড়ে বলছি। এখন নামতে হবে।
— কবি, শোনো।
— বলো পুষ্পিতা।
— একটা কবিতা শোনাও না?
— এতক্ষণ কী শোনালাম?
— এইগুলা কবিতা না।
— মানে?
— মানে ছাই। একটু ভিন্নরকম কবিতা শোনাও।
— ভিন্নরকম মানে?
— মানে কচু। শোনাতে হবে না।
— প্লিজ, বলো। কেমন কবিতা শুনতে চাও?
— বলব না। বুঝে নিতে হবে। পুষ্পিতা কেমন কবিতা শুনতে চায় এতদিনেও তুমি বুঝলে না, বোকা কবি।
কবি কিছুক্ষণ ভাবল। গলাটা একটু কেশে পরিষ্কার করে নিলো। অতঃপর কবি শোনালো তাঁর অমর কবিতাখানি—
পুষ্পিতা,
আমার কথা
জানি না—
তোমার বিশ্বাস হবে কি না?
একটি দিন কাটে না
ইদানীং তুমিহীনা।
নিঃস্তব, নিঃসীম রাতে
মনে হয়, আছো—
তুমি মোর সাথে।
কল্পনায় রাখি হাত
তোমার ওই নরম হাতে।
কবিতার ছন্দে কোথায় যেন হারিয়ে গেল পুষ্পিতা। চোখের সামনে একটি নদী— তাতে ছোটো ছোটো ঢেউ। নদীতে নৌকা। নৌকার বৈঠা চালাচ্ছে কবি। আর গলুইয়ে বসে নদীর শান্ত জল স্পর্শ করছে পুষ্পিতা। কী বিচিত্র অনুভূতি!
ওপাশ থেকে শব্দ এল, "পুষ্পিতা, তুমি কি দিনের বেলায়ই ঘুমিয়ে গেলে?"
পুষ্পিতা বলল, "তোমার কবিতার শেষ পাঁচটি লাইন আরও পাঁচবার শোনাও..."
কবি বলল, "কেন?"
পুষ্পিতা লম্বা একটি শ্বাস ছেড়ে বলল, "জানি না। জানি না..."
(চলবে....)
লেখা: ওয়াদুদ খান
বইটির প্রচ্ছদ করেছেন: মাহী মজুমদার
বইটি প্রকাশ করছে: বাংলানামা
১৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯
উপন্যাস: ফ্যান্টাসি- ৩ (কবি)
আসছে বইমেলা- ২০২০
কুরিয়ারে পেতে ডায়াল করুন: ০১৭৮৫-৫৬২০৮০
EmoticonEmoticon